Description

বাংলার মুসলমানরা আবার এক বিচিত্র রূপ ধারণ করেছে। আমাদের সীমান্তে বিদ্রোহীদের উৎপাত চলেছে বহু বছর যাবত। তারা একেক দল ধর্মান্ধকে পাঠিয়েছে, যারা আমাদের শিবির আক্রমণ করেছে, গ্রাম পুড়িয়েছে, আমাদের প্রজাদের হত্যা করেছে এবং আমাদের সেনাবাহিনীকে তিন-তিনটি ব্যয়বহুল যুদ্ধে লিপ্ত করেছে। আমাদের সীমান্তের ওপারে মাসের পর মাস ধরে গড়ে ওঠা শত্রু বসতির লোক নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে। বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক মোকদ্দমার বিচার থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, আমাদের প্রদেশসমূহের সর্ব বিস্তারিত হয়েছে এক ষড়যন্ত্রের জাল, পাঞ্জাবের উত্তরে অবস্থিত জনহীন পর্বতরাজির সঙ্গে উষ্মমন্ডলীয় গঙ্গা অববাহিকার জলাভূমি অঞ্চলে যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে রাজদ্রোহীদের নিরবচ্ছিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে। সুসংগঠিত প্রচেষ্টায় তারা ব-দ্বীপ অঞ্চল থেকে অর্থ ও লোক সংগ্রহ করে এবং দুই হাজার মাইল দূরে অবস্থিত বিদ্রোহী শিবিরে তা চালান করে দেয় আমাদেরই তৈরি করা রাস্তা দিয়ে। তীক্ষ্ণবুদ্ধি এবং বিপুল সম্পদের অধিকারী বহু লোক এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সুকৌশলে অর্থ পাচারের এমন এক পদ্ধতি তারা প্রয়োগ করেছে, যাতে রাজদ্রোহের চরম বিপদসংকুল অভিযান রূপান্তরিত হয়েছে নিরাপদ ব্যাংক ব্যবসার আদান-প্রদানে। মুসলমানদের মধ্যে যারা অপেক্ষাকৃত অধিক ধর্মান্ধ তারা এইভাবে রাজদ্রোহিতামূলক প্রকাশ্য তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। আর এই বিদ্রোহের প্রতি নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে প্রকাশ্যেই শলা-পরামর্শ করছে গোটা মুসলমান সম্প্রদায়। বিগত নয় মাস যাবত বাংলার প্রধান প্রধান সংবাদপত্রগুলোর পৃষ্ঠাসমূহ ভর্তি হয়েছে রানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া সম্পর্কে মুসলমানদের কর্তব্য সম্পর্কিত আলোচনায়। উত্তর ভারতের মুসলমান আইন-বিশারদ ব্যক্তিগণের সমষ্টিগত অভিমত সর্বপ্রথম প্রচারিত হয় একটি ফতোয়া রূপে। এর পরেই বাংলার মুসলমানরা এই বিষয়টি সম্পর্কে এক প্রচারপত্র বিতরণ করে। এমনকি ভারতের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র যে শিয়া সম্প্রদায় তারাও এই প্রচার অভিযান থেকে বিরত থাকে পারেনি।